Category: বাংলা ব্যাকরণ

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট : নতুন যুগে বাংলাদেশ

ভূমিকা : বাংলাদেশের মহাকাশ জয়ের গল্প রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হলো, যা ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকবে যুগযুগ ধরে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মহকাশ অভিযানের সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বাংলাদেশের প্রথম ভূস্থির যোগাযোগ উপগ্রহ। এটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে।

স্যাটেলাইট কী : স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত উপগ্রহ। এই মানবসৃষ্ট উপগ্রহকে বলা হয় কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে এমনভাবে পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে যাতে এর গতির বহির্মুখী শক্তি স্যাটেলাইটকে বাইরের দিকে গতি প্রদান করে কিন্তু পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে পৃথিবীর আওতার বাইরে যেতে দেয় না। উভয় শক্তি স্যাটেলাইটে ভারসাম্য প্রদান করে এবং স্যাটেলাইট পৃথিবীর চুতর্দিকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। যেহেতু মহাকাশে বায়ুর অস্তিত্ব নেই, তাই এটি বাধাহীন পরিভ্রমণ করে। স্যাটেলাইট বৃত্তাকার পরিভ্রমণ করে না, এর গতিপথ ডিম্বাকার কারণ পৃথিবীর আকৃতি ডিম্বাকার। পৃথিবী থেকে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে সিগন্যাল বা ডেটা পাঠানো হয়, স্যাটেলাইট সেগুলো গ্রহণ করে এবং এম্পলিফাই করে পৃথিবীতে প্রেরণ করে।

ইতিহাস : ২০০৮ সালে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কৃত্রিম উপগ্রহ নির্মাণ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে। এরপর ২০০৯ সালে জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালায় রাষ্ট্রীয় কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের বিষয়টি যুক্ত করা হয়। বাংলাদেশের নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিটের কাছে ইলেকট্রনিক আবেদন করে বাংলাদেশ। কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবস্থার নকশা তৈরির জন্য ২০১২ সালের মার্চে প্রকল্পের মূল পরামর্শক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনারশীপ ইন্টারন্যাশনাল কে নিয়োগ দেওয়া হয়। স্যাটেলাইট সিস্টেম কিনতে ফ্রান্সের কোম্পানি থেলিস অ্যালেনিয়া স্পেসের সঙ্গে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার চুক্তি করে বিটিআরসি। ২০১৫ সালে বিটিআরসি রাশিয়ার উপগ্রহ কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনার আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে। ২০১৭ সালে কৃত্রিম উপগ্রহের সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি নিমিটেড নামে একটি সংস্থা গ্রঠন করা হয়। এই সংস্থার প্রাথমিক মূলধন হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয় ৫০০০ কোটি টাকা।

বিবরণ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। ফ্রান্সের থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস কর্তৃক নকশা ও তৈরি করা হয়েছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি মালিকানাধীন মহাকাশযান সংস্থা স্পেস-এক্স থেকে উৎক্ষেপণ করে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১৬০০ মেগা হার্টজ ক্ষমতাসম্পন্ন মোট ৪০ টি কু এন্ড সি ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার বহন করছে। স্যাটালাইটের বাইরের অংশে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকার রঙের নকশার উপর ইংরেজিতে লেখা রয়েছে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু-১। বাংলাদেশ সরকারের একটি মনোগ্রামও সেখানে রয়েছে।

নির্মাণ ব্যয় : কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশে সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ সেবা পরিচালনার জন্য ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একনেক সভায় ২৯৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৩১৫ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা যা মোট ব্যয়ের ৪৪ শতাংশ। এ ছাড়া বিডার্স ফাইন্যান্সিং এর মাধ্যমে এ প্রকল্পের জন্য ১৬৫২ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা নেয়া হয়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে হংকং ব্যাংকিং কর্পোরেশনের সাথে সরকারের প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি হয়। ১.৫১ শতাংশ হার সুদসহ ১২ বছরে ২০ কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

নির্মাণ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ফ্রান্সের থ্যালিস অ্যালেনিয়া স্পেস। এটির নির্মাণ শেষ হয় ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ। নির্মাণ, পরীক্ষা, পর্যালোচনা ও হস্তান্তর শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে করে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ সাইটে পাঠায়। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ওজন তিন হাজার কেজি।

যা আছে : এই স্যাটেলাইটে ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার আছে। যার ২০ টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। আর বাকি ২০ টি ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

কক্ষপথ কেনা : স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং তা কক্ষপথে রাখার জন্য রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ কেনা হয়। মহাকাশে এই কক্ষপথের অবস্থান ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সম্পাদিত চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য এই কক্ষপথ কেনা হয়।

স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট : বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট বা কভারেজ হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভূক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন : বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায়। এর মধ্যে গাজীপুরের তেলীপাড়ায় টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রাইমারি গ্রাউন্ড স্টেশনটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। এটিই মূল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের। আর রাঙ্গামাটি গ্রাউন্ড স্টেশনটি গাজীপুরে স্থাপন করা গ্রাউন্ড স্টেশনের বিকল্প।

উৎক্ষেপণ : স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ উৎক্ষেপণ যানে করে ১২ মে বাংলাদেশ সময় রাত ২ টা ১৪ মিনিটে (২০:১৪ ইউটিসি ১১ মে ২০১৮) সফলভাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ব্লক ৫ মডেল ব্যবহার করে প্রথম পেলোড উৎক্ষেপণ ছিল।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সুবিধাসমূহ : বর্তমানে দেশের টেলিভিশন চ্যালেনগুলো সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট চালুর ফলে অনেকাংশেই কমে আসবে এ ব্যয়। টেলিভিশন চ্যালেন ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরণের সেবা পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। যেকোন ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগ, টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম ই-সেবা নিশ্চিত করবে। এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বভাস, টেলিমেডিসিন, ই-লানিং, ই-রিসার্চ, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ভালো তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে নেপাল মিয়ানমার, ভূটান ও অন্যান্য দেশের কাছে সেবা ভাড়া দিতে পারবে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা যাবে। স্যাটেলাইট ভিত্তিক টেলিভিশন সেবা ডিটিএইচ ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও এ স্যাটেলাইটটি কাজে লাগবে। এটি আমাদের দেশে সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে, আবহাওয়ার গতি পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে, ঝড়ের গতিবেগ ও পথ নির্ণয় করে ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনা যাবে। টিভি এবং রেডিও ব্রডকাস্ট আরও দ্রুত এবং মসৃণ হবে। এইচডি কোয়ালিটি বাড়ানো যাবে। নিজস্ব স্যাটেলাইটের জন্য ইন্টারনেটের গতি বাড়বে। ভূমি ও সমুদ্রে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানে সহয়তা করবে এবং ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি ইত্যাদি কাজে এটি ব্যবহৃত হবে।

সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ

  • অন্ধকার – আঁধার, তমসা, তম, তমঃ, তিমির, তমিস্র, তমসা, নিরালোক, অমা, অনামিশা, শর্বর, নভাক।
  • অশ্রু – চোখের জল, নেত্রজল, লোর, নয়নজল, অশ্রুবারি, আখিঁ-নীর।
  • অনুশীলন – চর্চা, অভ্যাস, রেওয়াজ, মকশো, তালিম।
  • আলো – ভাতি, দীপ্তি, প্রভা, জ্যোতি, উদ্ভাস, আভা, বিভা, নূর, রওশন, দ্যুতি।
  • আকাশ – অন্তরীক্ষ, অম্বর, অভ্র, অনন্ত, গগণ, ব্যোম, শূন্য, শূন্যলোক, নভঃ, নীলিমা, দুল্যোক, আসমান।
  • আগুন – অগ্নি, অনল, পাবক, বহ্নি, হুতাশন, হুতাশ, কৃশানু, বৈশ্বানর, বিভাবসু, দহন, শিখা, সর্বভূক, সর্বশুচি, বীতিহত্রো।
  • আনন্দ – হর্ষ, হরষ, পুলক, আহ্লাদ, সুখ, ফুর্তি, আমোদ, প্রমোদ, হাসি, খুশি, প্রীতি, উদ্ভাসিত।
  • ইতি – অবসান, বিরাম, শেষ, সমাপ্তি, অন্তিম, অন্ত্য, যবনিকা।
  • ইচ্ছা/ঈস্পা – আকাঙ্খা, স্পৃহা, বাঞ্ছা, মনোরথ, বাসনা, কামনা, অভিলাষ, অভিপ্রায়, আগ্রহ, অভীপ্সা, সাধ, চাওয়া।
  • ঈশ্বর – আল্লাহ, খোদা, ইলাহি, ইশ, প্রভু, মনিব, জগদীশ্বর, জগন্নাথ, ধাতা, বিধাতা, ভগবান, সৃষ্টিকর্তা, স্রষ্টা, পরমাত্মা, বিশ্বপতি, অমর, অমরেশ, অজর, অন্তর্যামী, দেব, দেবতা, সুর।
  • উচ্ছ্বাস – স্ফীতি, স্ফুর্তি, বিকাশ, উল্লাস, স্ফুরণ, উচ্ছলতা, প্রাণাবেগ।
  • ঋত্বিক – যাজ্ঞিক, যজ্ঞকর্তা, যাজক, হোমী, হোমক, হোত্রী।
  • ঋণ – দেনা, ধার, কর্জ, হাওলাত।

ভিশন-২০২১

ভিশন-২০২১ বা রূপকল্প-২০২১ – নেয়ার কারণঃ

দু হাজার একুশ সালে বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছরে পা রাখবে। সুবর্ণ জয়ন্তীর এই লগ্নে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে আমরা কোন অবস্থানে দেখতে চাই, সেটাই বস্তুত ভিশন ২০২১-এর মূল কথা। নতুন সহস্রাব্দে পদার্পণের পর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এক নিরাপদ বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়। জাতিসংঘ যেমন মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (MDGS)-এ ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ করা শুরু করে, বাংলাদেশও তেমনি এই বৈশ্বিক উন্নয়ন-শোভাযাত্রায় সহযাত্রী হিসাবে অংশ নিতে ভিশন ২০২১-এর ব্যানার নিয়ে এগিয়ে আসে। .

ভিশন-২০২১ এর উদ্দেশ্যঃ

ভিশন ২০২১-এর প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হলো নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা যেখানে চরম দারিদ্র্য সম্পূর্ণভাবে বিমোচিত হবে। সেজন্যে একগুচ্ছ সহায়ক কাজ নিশ্চিত করতে হবে। কেমন, গণতন্ত্র ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা করা; ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ এবং জনপ্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক অবকাঠামো বিনির্মাণ করা; রাজনৈতিক পক্ষপাতবিবর্জিত আইনের শাসন নিশ্চায়ক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন করা; দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা; নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমঅধিকার নিশ্চিত করা; এমনভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন করা যাতে মৌলিক চাহিদাসমূহ পূরণের নিশ্চয়তা থাকে, জনগণ ও শ্রমশক্তির সুরক্ষার বন্দোবস্ত থাকে, দারিদ্র্য দূরীকরণের ব্যবস্থা থাকে, খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ব্যবস্থা থাকে, জ্বালানি ও বিদ্যুতের নিশ্চয়তা থাকে, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, আবাসন, পরিবেশ, পানিসম্পদের নিরাপত্তা থাকে, এবং সার্বিকভাবে জনজীবন ও সম্পদের সুরক্ষা থাকে; বৈশ্বিক পেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করা যাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত থাকে, জাতীয় সংস্কৃতি ও পররাষ্ট্র নীতি দৃঢ়তর হয়। .

ভিশন-২০২১ – এর বিষয় সমূহঃ

রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের সমবায়কে কাজে লাগিয়ে ২২টি লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান সরকার। ২২টি লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে- বিকাশমান অর্থনীতি, দারিদ্র্য মুক্তি, অংশীদারিত্বমূলক সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারীর সমঅধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, সুশাসন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ। .

ভিশন-২০২১ এর ২২টি লক্ষ্যমাত্রাঃ

রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে যে ২২টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে :

১। প্রতি গ্রামে সমবায় সমিতি গড়ে সমিতির সদস্যদের সন্তান কিংবা পোষ্যদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। এভাবে ২০১০ সালের মধ্যে প্রথিমিক স্তরে ভর্তির হার ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা।

২। ২০১০ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানির ব্যবস্থ্যা করা।

৩। ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা।

৪। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিটি বাড়িকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা।

৫। ২০১৩ সালে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এই হার ১০ শতাংশে উন্নীত করে অব্যাহত রাখা।

৬। ২০১৩ সালে বিদ্যুতের সরবরাহ হবে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালে ৮ হাজার মেগাওয়াট। ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ২০ হাজার মেগাওয়াট ধরে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৭। ২০১৩ সালে পর্যায়ক্রমে স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৮। ২০১৪ সালে নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

৯। ২০১৫ সালের মধ্যে সকল মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা।

১০। ২০১৫ সালে জাতীয় আয়ের বর্তমান হিস্যা কৃষিতে ২২ শিল্পে ২৮ ও সেবাতে ৫০ শতাংশের পরিবর্তে হবে যথাক্রমে ১৫, ৪০ এবং ৪৫ শতাংশ করা।

১১। ২০২১ সালে বেকারত্বের হার বর্তমান ৪০ থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে।

১২। ২০২১ সালে কৃষি খাতে শ্রমশক্তি ৪৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ শতাংশে।

১৩। ২০১১ সালে শিল্পে শ্রমশক্তি ১৬ থেকে ২৫ শতাংশে এবং সেবা খাতে ৩৬ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নীত হবে।

১৪। ২০২১ সাল নাগাদ বর্তমান দারিদ্র্যের হার ৪৫ থেকে ১৫ শতাংশে নামবে।

১৫। ২০২১ সালে তথ্য প্রযুক্তিতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করবে।

১৬। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ নগরিকের মানসম্পন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত হবে।

১৭। ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিদিন নূন্যতম ২১২২ কিলোক্যালরির উপর খাদ্য নিশ্চিত করা হবে।

১৮। ২০২১ সালের মধ্যে সকল প্রকার সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মূল করা।

১৯। ২০২১ সালে গড় আয়ুষ্কাল ৭০ এর কোঠায় উন্নীত করা।

২০। ২০২১ সালে শিশু মৃত্যুর হার বর্তমান হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা।

২১। ২০২১ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ৩.৮ থেকে কমে ১.৫ শতাংশ হবে।

২২। ২০২১ সালে প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করা। এই ২২টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। . ভিশন-২০২১ এর সাথে ডিজিটাল

বাংলাদেশ -এর সম্পর্কঃ

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দযুগলের সাথে ‘ভিশন ২০২১’ শব্দযুগলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ইংরেজি ভিশন শব্দের অর্থ দূরদৃষ্টি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির বছর ২০২১ সাল। ডিজিটাল যন্ত্রপাতি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, অর্থাৎ আইসিটির বহুল ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০২১ সালে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করেছে। কমপিউটার ও ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহার এ দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। জনসাধারণের প্রত্যাশার সাথে সরকারের প্রত্যাশার মিলনের ফলে সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে সবাই আশাবাদী। . বর্তমান সভ্যতা ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। কমপিউটার, মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, প্রিন্টার, ইন্টারনেট ইত্যাদি ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ও ব্যবস্থার উদাহরণ। ডিজিটাল প্রযুক্তি, ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও তাদের সঠিক ব্যবহার দ্রুত উন্নয়নের চালিকাশক্তি। তাই রূপকল্প ২০২১-এর সাথে রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির গভীর সম্পর্ক। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়া রূপকল্প ২০২১-এর উদ্দেশ্য। ২০২১ সালের বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সুশিক্ষিত, সুদক্ষ এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। . ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘নগদ অর্থের চেয়ে উত্তম জোটে’র (Better than cash Allign) সাথে অংশিদারিত্ব খুলে বাংলাদেশ—জনগণকে আর্থিক সেবাদানের ক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। বস্তুত, সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্যে জনগণকে প্রদেয় অর্থ এবং সেবা গ্রহণের বিনিময়ে জনগণের কাছ থেকে গৃহীতব্য সকল অর্থ লেনদেনের প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করে ডিজিটাল অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এই প্রক্রিয়া সকল প্রকার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন এবং রেমিট্যান্স বিনিময়ের ক্ষেত্রকে সুগম ও সম্প্রসারিত করে ই-কমার্সকে শক্তিশালী করবে। ব্যয় সংকোচন, স্বচ্ছতাবর্ধন, সময় বাঁচানো প্রভৃতির সহায়ক হওয়ায় ডিজিটাল আর্থিক সেবাপ্রদানের এই পদ্ধতি বিশ্বের বহু সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও গ্রহণ করেছে। দেশে গ্রামের এবং শহরের মিলে ৫০০০-এর অধিক ডিজিটাল সেন্টার খোলায় গড়ে ৪.৫ মিলিয়ন মানুষকে সম্প্রতি ৬০টি ডিজিটাল সেবা-সুযোগের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে। এ সকল ডিজিটাল সেন্টারে দুজন উদ্যোক্তার মধ্যে একজন নারী নিযুক্তির বিধানকে বাধ্যতামূলক করায় নারী সংবেদনশীল সেবা প্রদানের পরিবেশও নিশ্চিত হচ্ছে।

ণত্ব ও ষত্ব বিধান

ণত্ব বিধান :
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে ‘ণ’ এর ব্যবহারের নিয়মকে ণত্ব বিধান বলে।
ণ ব্যবহারের নিয়ম :
➺ ট বর্গীয় ধ্বনির অাগে দন্ত্য ‘ন’ ব্যবহৃত হয়ে যুক্ত ব্যঞ্জন গঠিত হলে, সব সময় মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
যেমন : ঘণ্টা, লণ্ঠন, কাণ্ড।
➺ ঋ, র, ষ এর পরে মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
যেমন : ঋণ, মরণ, ভীষণ।
➺ ঋ, র, ষ এর পরে স্বরধ্বনি, ষ, য়, হ, ং এবং ক বর্গীয় ও প বর্গীয় ধ্বনি থাকলে পরবর্তী দন্ত্য ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
যেমন: কৃপণ, হরিণ, অর্পণ, লক্ষণ।
➺ কতকগুলো শব্দে স্বভাবতই মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
যেমন :
চাণক্য মাণিক্য গণ
বাণিজ্য লবণ মণ,
বেণু বীণা কঙ্কণ কণিকা।
কল্যাণ শোণিত মণি
স্থাণু গুণ পুণ্য বেণী,
ফণী অণু বিপণি গণিকা।
অাপণ লাবণ্য বাণী
নিপুণ ভণিতা পাণি,
গৌণ কোণ ভাণ পণ শাণ।
চিক্কণ নিক্কণ ভূণ
কফোণি বণিক গুণ,
গণনা পিণাক পণ্য বাণ।
ণ ব্যবহার হবে না :
➺ সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত ণ-ত্ব বিধান খাটে না।
যেমন: ত্রিনয়ন, সর্বনাম, দুর্নীতি, দুর্নাম।
➺ ত বর্গীয় বর্ণের সসাথে যুক্ত ন কখনো ণ হয় না, সাধারণত সবসময় ন হয়।
যেমন : অন্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন, সন্ধ্যা, কান্না।
ষত্ব বিধান :
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ‘ষ’ এর ব্যবহারের নিয়মকে ষত্ব বিধান বলে।
ষ ব্যবহারের নিয়ম :
➺ অ, অা ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং ক ও র এর পরের ষ-প্রত্যয়ের স থাকলে তা ‘ষ’ হয়।
যেমন : ভবিষ্যৎ, মুমূর্ষু, চক্ষুষ্মান, চিকীর্ষা।
➺ ই কারান্ত এবং উ কারান্ত উপসর্গের পর কতকগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়।
যেমন : অভিসেক > অভিষেক, অনুসঙ্গ > অনুষঙ্গ, প্রতিসেধক > প্রতিষেধক।
➺ ঋ কার ও র এর পরে ষ হয়।
যেমন : ঋষি, কৃষক, বর্ষা, বর্ষণ।
➺ ট ও ঠ এর সঙ্গে যুক্ত হলে দন্ত্য ‘স’ না হয়ে মুর্ধন্য ‘ষ’ হয়।
যেমন : কষ্ট, স্পষ্ট, ওষ্ঠ, কাষ্ঠ।
➺ কতকগুলো শব্দে স্বভাবতই মুর্ধন্য ‘ষ’ বসে।
যেমন : অাষাঢ়, অাভাষ, অভিলাষ, ঈষৎ, ঊষা, ঊষর, ঔষধ, ঔষধি, কলুষ, কোষ, তোষণ, দ্বেষ, পাষণ্ড, পাষাণ, পোষণ, ভাষা, ভাষ্য, ভাষণ, ভূষণ, শোষণ, ষটচক্র, ষড়যন্ত্র, ষণ্ড, মানুষ, ষোড়শী, সরিষা, রোষ।
ষ ব্যবহার হবে না :
➺ বাংলা ও বিদেশী ভাষা থেকে অাগত শব্দে ষ হয় না।
যেমন : পোস্ট, পোশাক, মাস্টার, জিনিস।
➺ সংস্কৃত ‘সাৎ’ প্রত্যয়যুক্ত পদেও ষ হয় না।
যেমন : অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ।

ধ্বনির পরিবর্তন

ভাষার পরিবর্তন ধ্বনির পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত। ধ্বনি পরিবর্তন নানা প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। নিচে তা উল্লেখ করা হলো :
● অাদি স্বরাগম :
উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোন কারণে শব্দের অাদিতে স্বরধ্বনি এলে তাকে অাদি স্বরাগম বলে।
যেমন : স্কুল > ইস্কুল, স্পর্ধা > অাস্পর্ধা
● মধ্য স্বরাগম/বিপ্রকর্ষ/স্বরভক্তি :
উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি অাসে তখন তাকে মধ্য স্বরাগম/
বিপ্রকর্ষ/স্বরভক্তি বলে।
যেমন : রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম
● অন্ত্যস্বরাগম :
কোনো কোন সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি অাসলে তাকে অন্ত্যস্বরাগম বলে।
যেমন: পোখত্ > পোক্ত, সত্য > সত্যি
● অপিনিহিতি :
পরের ই/উ কার অাগে উচ্চারিত হলে অথবা যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির অাগে ই/উ কার উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে।
যেমন : অাজি > আইজ, সাধু > সাউধ
● অসমীকরণ :
একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে যখন স্বরধ্বনি যুক্ত হয় তখন তাকে বলে অসমীকরণ।
যেমন : ধপ+ধপ > ধপাধপ, টপ + টপ > টপাটপ।
● স্বরসঙ্গতি :
একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে।
যেমন : দেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি
সরসঙ্গতি কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যথা :
➺ প্রগত : অাদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়।
যেমন : মুলা > মুলো, শিকা > শিকে।
➺ পরাগত : অন্ত্যস্বরের কারণে অাদিস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়।
যেমন : অাখো > অাখুয়া > এখো, দেশি > দিশি
➺ মধ্যগত : অাদিস্বর ও অন্ত্যস্বর কিংবা অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়।
যেমন : বিলাতি > বিলিতি।
➺ অন্যোন্য : অাদ্য ও অন্ত্য দু স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হলে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি স্বরসঙ্গতি হয়।
যেমন : মোজা > মুজো
● সমপ্রকর্ষ/স্বরলোপ :
দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের অাদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোন স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ/
স্বরলোপ।
যেমন:
ক. অাদিস্বরলোপ : অালাবু > লাবু > লাউ
খ. মধ্যস্বরলোপ : সুবর্ণ > স্বর্ণ
গ. অন্তস্বরলোপ : অাশা > অাশ, চারি > চার
● ধ্বনি বিপর্যয় :
শব্দের মধ্যে দুটো ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।
যেমন : বাক্ স > বাস্ ক, রিকসা > রিসকা
● সমীভবন :
শব্দমধ্যস্থ দুটো ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্প-বিস্তর সমতা লাভ করে। এ ব্যাপারকে বলা হয় সমীভবন।
যেমন : জন্ম > জম্ম, কাঁদনা > কান্না
ক. প্রগত সমীভবন : পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ পরবর্তী ধ্বনির মত হয়, একে প্রগত সমীভবন বলে।
যেমন : চক্র > চক্ ক, পক্ব > পক্ ক
খ. পরাগত সমীভবন : পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হয়, একে বলে পরাগত সমীভবন।
যেমন : তৎ + জন্য = তজ্জন্য, তৎ +হিত
গ. অন্যোন্য সমীভবন : যখন পস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয় তখন তাকে বলে অন্যোন্য সমীভবন।
যেমন: সংস্কৃত সত্য > প্রাকৃত সচ্চ, সংস্কৃত বিদ্যা > প্রাকৃত বিজ্জা
● বিষমীভবন :
দুটো সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে।
যেমন : শরীর > শরীল, লাল > নাল।
● দ্বিত্ব ব্যঞ্জন/ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা :
কখনো কখনো জোর দেওয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হয়, একে বলে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা।
যেমন : পাকা > পাক্কা, সকাল > সক্কাল
● ব্যঞ্জন বিকৃতি :
শব্দ মধ্য কোনো কোনো সময় কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জন ধ্বনি ব্যবহৃত হয়। একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি।
যেমন : কবাট > কপাট, ধোবা > ধোপা
● ব্যঞ্জনচ্যুতি :
পাশাপাশি সমউচ্চারণের দুটো ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে তার একটি লোপ পায়। এ রূপ লোপকে বলা হয় ব্যঞ্জনচ্যুতি।
যেমন : বড়দিদি > বউদি, বড়দাদা > বড়দা
● অন্তর্হিত :
পদের মধ্যে কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলে অন্তর্হিত।
যেমন : ফাল্গুন > ফাগুন, ফলাহার > ফলার।
● অভিশ্রুতি :
বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববতী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে বলে অভিশ্রুতি।
যেমন : শুনিয়া > শুনে, বলিয়া > বলে
● র কার লোপ :
অাধুনিক চলিত বাংলায় অনেক ক্ষেত্রে র-কার লোপ পায় এবং পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হয়।
যেমন : তর্ক > তক্ক, করতে > কত্তে
● হ-কার লোপ :
অাধুনিক চলিত ভাষায় অনেক সময় দু স্বরের মাঝামাঝি হ-কার লোপ কয়।
যেমন : পুরোহিত > পুরুত, গাহিল > গাইল।

বানান শুদ্ধি :

১। বস্তুবাচক শব্দ ও প্রাণিবাচক অ-তৎসম শব্দের শেষে ই-কার (ি) হবে। যেমন-
বস্তুবাচক শব্দ : বাড়ি, গাড়ি, শাড়ি, চাবি
প্রাণিবাচক : মুরগি, পাখি, হাতি
২। দেশ, জাতি ও ভাষার নাম লিখতে সর্বদা ই-কার (ি) হবে। যেমন –
দেশ: জার্মানি, ইতালি, গ্রিস, চিলি
জাতি : বাঙ্গালি, জাপানি, পর্তুগিজ
ভাষা: ইংরেজি, হিন্দি, অারবি
৩। স্ত্রীবাচক শব্দে সর্বদা ঈ-কার (ী) হবে। যেমন – যুবতী, জননী, স্ত্রী।
৪। বিদেশী শব্দের বানান বাংলায় লেখার সময় ‘ষ’ ও ‘ণ’ না হয়ে ‘স’ ও ‘ন’ হবে।
যেমন –
◆ ষ্টেশন > স্টেশন
◆ ষ্টুডিও > স্টুডিও
◆ গভর্ণর > গভর্নর
◆ কর্ণেল > কর্নেল
৫। বানানে যে বর্ণের উপর রেফ থাকে, সেই বর্ণে দ্বিত হবে না। যেমন-
◆ কার্য্যালয় > কার্যালয়
◆ ধর্ম্মসভা > ধর্মসভা
◆ নির্দ্দিষ্ট > নির্দিষ্ট
◆ পর্ব্বত > পর্বত।
৬। বিস্ময়সুচক অব্যয় (যেমন: বাঃ/ছিঃ/উঃ ইত্যাদি) ব্যতীত বাংলা কোন শব্দের শেষে বিসর্গ থাকবে না। যেমন-
◆ কার্যতঃ> কার্যত
◆ প্রায়শঃ > প্রায়শ
◆ বিশেষতঃ > বিশেষত
◆ প্রথমতঃ > প্রথমত
৭। কোন শব্দের শেষে যদি ঈ-কার (ী) থাকে, সেই শব্দের সঙ্গে জগৎ, বাচক, বিদ্যা, সভা, ত্ব, নী, ণী, পরিষদ, তত্ত্ব ইত্যাদি যুক্ত হয়ে যদি নতুন শব্দ গঠন করে তবে পূর্ববর্তী শব্দের ঈ-কার (ী) নবগঠিত শব্দে সাধারণত ই-কারে (ি) পরিণত হয়। যেমন-
◆ প্রাণী+বিদ্যা= প্রাণিবিদ্যা
◆ মন্ত্রী + পরিষদ = মন্ত্রিপরিষদ
◆ কৃতী+ত্ব = কৃতীত্ব
◆ প্রতিদ্বন্দ্বী + তা = প্রতিদ্বন্দ্বিতা
◆ সঙ্গী +নী = সঙ্গিনী
৮। শব্দে উর্ধ্বকমা ও হসন্তচিহ্নযথাযথ বর্জন করতে হবে। যেমন:
◆ হ’ল > হল, দু’টি > দুটি, তা’র > তার
◆ চট্ > চট, চেক্ > চেক, করব্ > করব
৯। অদ্ভুত এর ভুত ব্যতীত অার সব ভূত-এ (ূ) হবে। যেমন: অভিভূত, একীভূত, দ্রবীভূত, অভূতপূর্ব।
১০। সন্ধিতে প্রথম পদের শেষে ম্ থাকলে ক বর্গের পূর্ব ম্ স্থানে ম্ স্থানে ং লেখা হবে। যেমন: অহংকার, ভয়ংকর, সংগীত। অন্যান্য ক্ষেত্রে ক, খ, গ, ঘ এবং ক্ষ-এর পূর্বে নাসিক্য বর্ণ যুক্ত করার জন্য সর্বত্র ঙ্ লেখা হবে। যেমন : অঙ্ক, অাকাঙ্ক্ষা।
১১। বিশেষণবাচক ‘অালি’ প্রত্যয়যুক্ত ই-কার (ি) হবে। যেমন:
◆ বর্ণালী > বর্ণালি, রূপালী > রূপালি, সোনালী > সোনালি।
১২। যে সব তৎসম শব্দে ই, ঈ বা উ, ঊ উভয় শুদ্ধ সেসব শব্দে কেবল ই বা উ এবং তার বারচিহ্ন ি, ু ব্যবহৃত হবে। যেমন: কিংবদন্তি, খঞ্জনি, চিৎকার, ধমনি, ধূলি, পঞ্জি, পদবি, ভঙ্গি, মঞ্জরি, মসি, লহরি, সরণি, সূচিপত্র, উষা।
১৩। কিছু জটিল শব্দের বানান:
অ:
অকস্মাৎ, অগ্ন্যাশয়, অগ্নুৎপাত, অচিন্ত্য, অত্যধিক, অধ্যত্ম, অনিন্দ্য, অনূর্ধ্ব, অন্তঃসত্ত্বা, অন্তর্জ্বালা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, অমর্ত্য, অলঙ্ঘ্য, অশ্বত্থ।
অা:
অাকাঙ্ক্ষা, অার্দ্র, অাবিষ্কার, অপরাহ্ণ, অাহ্নিক, অানুষঙ্গিক।
উ:
উচ্চৈঃস্বরে, উচ্ছ্বাস, উজ্জ্বল, উত্ত্যক্ত, উদ্ভিদ, উপর্যুক্ত, উপলব্ধি।
ঊ :
ঊর্ধ্ব
এ :
এতদ্বারা, এতদ্ব্যতীত।
ঐ :
ঐকাত্ম্য, ঐন্দ্রজালিক, ঐশীশক্তি, ঐষীক।
ও :
ওষ্ঠাধর, ওজস্বিতা, ওতপ্রোতভাবে।
ঔ :
ঔজ্জ্বল্য, ঔদ্বত্য, ঔর্ণানাভ।
ক :
কর্তৃ, কর্তৃক, কর্ত্রী, কাঙ্ক্ষিত, কৃচ্ছ্র, কৃত্তিবাস, ক্বচিৎ, ক্রূর, কঙ্কণ, কনীনিকা, ক্ষুদ্ধ, ক্ষুন্নিবৃত্তি, ক্ষিতিশ, ক্ষেপণাস্ত্র, ক্ষুধানিবৃত্তি, ক্ষুন্নিবারণ।
গ :
গার্হস্থ্য, গ্রীষ্ম, গৃহিণী, গণনা, গণ্ডেপিণ্ডে, গন্ধেশ্বরী।
ঘ :
ঘূর্ণায়মান, ঘটনাবলি, ঘণ্টা, ঘনিষ্ঠতা, ঘৃতাহুতি, ঘ্রাণেন্দ্রিয়।
জ :
জলোচ্ছ্বাস, জাজ্বল্যমান, জীবাশ্ম, জ্বর, জ্বলজ্বল, জ্বলা, জ্বালা, জ্বালানি, জ্যেষ্ঠ, জ্যৈষ্ঠ, জ্যোৎস্না, জ্যোতি, জ্যোতিষী, জ্যোতিষ্ক।
ট :
টইটম্বুর, টীকাটিপ্পনী, টানাপড়েন, টানাহেঁচড়া।
ঠ :
ঠাট্টাতামাশা, ঠাকুরপূজা।
ত:
তাৎক্ষণাৎ, তত্ত্ব, তত্ত্ববধান, তদ্ব্যতীত, তাত্ত্বিক, তীক্ষ্ম, ভূষ্ণীম্ভার, ত্বক, ত্বরণ, ত্বরান্বিত, ত্বরিত, ত্যক্ত।
দ :
দয়ার্দ্র, দারিদ্র্য, দুরাকাঙ্ক্ষা, দুর্নিরীক্ষ্য, দৌরত্ম্য, দ্বন্দ্ব, দ্বিতীয়, দ্বিধা, দ্বিতীয়, দ্বিধা, দ্বেষ, দ্বৈত, দ্ব্যর্থ, দ্যূতক্রীড়া।
ধ :
ধ্বংস, ধ্বজা, ধ্বনি, ধ্বন্যাত্মক।
ন :
নঞর্থক, নিক্বণ, নির্দ্বন্দ্ব, নির্দ্বিধ, নৈর্ঋত, ন্যস্ত, ন্যুব্জ, ন্যূনতম, নিশীথিনী।
প:
পক্ব, পঙক্তি, পক্ষ্ম, পরাঙ্মুখ, পার্শ্ব, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রত্যুষ, প্রাতঃকৃত্য, প্রাতভ্রমণ, প্রাতভোজন, প্রোজ্জ্বল, পৌরোহিত্য, পৈতৃক, পিপীলিকা।
ব :
বক্ষ্যমাণ, বন্দ্যোপাধ্যায়, বন্ধ্যা, বায়োজ্যেষ্ঠ, বহিরিন্দ্রিয়, বাত্যাবিধ্বস্ত, বাল্মীকি, বিদ্বজ্জন, বিভীষিকা, বিভূতিভূষণ, বৈচিত্র্য, বৈদগ্ধ্য, বৈশিষ্ট্য, ব্যক্ত, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, ব্যগ্র, ব্যঙ্গ, ব্যঞ্জনা, ব্যতিক্রম, ব্যতিরেকে, ব্যতিব্যস্ত, ব্যতীত, ব্যত্যয়, ব্যথা, ব্যতীপাত ব্যথিত, ব্যপদেশ, ব্যবচ্ছেদ, ব্যবধান, ব্যবসা, ব্যবস্থা, ব্যবহার, ব্যয়, ব্যর্থ, ব্যস্ত, ব্যুৎপত্তি, ব্যূহ, ব্রাহ্মণ।
ভ :
ভৌগলিক, ভ্রাতৃত্ব, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভ্রান্ত, ভ্রাম্যমাণ।
ম :
মধুসূদন, মনস্তত্ত্ব, মন্বন্তর, মর্ত্য, মহত্ত্ব, মাহাত্ম্য, মুহুর্মুহু, মুমূর্ষু, মুহূর্ত, মহৌষধ, মৃণালিনী, মৃত্তিকা, ম্রিয়মাণ।
য :
যথোপযুক্ত, যদ্যপি, যশঃপ্রার্থী, যক্ষ্মা, যশস্বী, যাচ্ঞা, যথার্থ্য, যূপকাষ্ঠ, যোগরূঢ়, যৌবনোত্তীর্ণ।
র :
রশ্মি, রৌদ্র, রুক্সিণী, রুচিবিগর্হিত, রূপণ, রৌদ্রকরোজ্জ্বল, রৌরব, রৌপ্য, রৌশন।
ল :
লক্ষ্মণ, লক্ষ্মী, লক্ষ্য, লঘূকরণ, লুপ্তোদ্ধার, লোমোদ্গম।
শ :
শস্য, শাশ্বত, শিরশ্ছেদ, শিষ্য, শ্বশুর, শ্বশ্র, শ্বপদ, শ্মশান, শ্মশ্রু, শ্রদ্ধাস্পদেষু, শ্রীমতী, শ্যন, শ্লেষ্মা, শিরঃপীড়া, শুশ্রষা।
ষ :
ষড়ানন, ষণ্মাতুর, ষাণ্মাসিক।
স :
সংবর্ধনা, সত্তা, সত্ত্ব, সত্ত্বেও, সন্ধ্যা, সন্ন্যাস, সম্মেলন, সরস্বতী, সাত্ত্বিক, সান্ত্বনা, সিন্দূর, সূক্ষ্ম, সৌহার্দ্য, স্বতঃস্ফূর্ত, স্বত্ব, স্বাচ্ছন্দ্য, স্বাতন্ত্র্য, স্বায়ত্তশাসন, স্বাস্থ্য, স্মরণ।
◆ হ:
হীনম্মন্যতা, হ্রস্ব, হ্রাস, হৎপিণ্ড, হোঁচট, হ্রস্বীভূত, হ্রেষা, হ্রদ

বর্ণ

বর্ণ:
ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ।
বর্ণমালা:
যে কোন ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সে ভাষার বর্ণমলা বলা হয়।
বঙ্গলিপি :
যে বর্ণমালায় বাংলা বর্ণ লিখিত হয় তাকে বলা হয় বঙ্গলিপি।
➺ বাংলা বর্ণমালায় বর্ণ ৫০ টি।
বর্ণের প্রকারভাদ:
বর্ণ দুই প্রকার। যথা :
ক. স্বরবর্ণ
খ. ব্যঞ্জনবর্ণ
স্বরবর্ণ :
স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় স্বরবর্ণ।
➺ বাংলা বর্ণমালায় স্বরবর্ণ ১১ টি।
ব্যঞ্জনবর্ণ :
ব্যঞ্জনধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ।
➺ বাংলা বর্ণমালায় ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টি।
মাত্রা:
কোন বর্ণের উপরে রেখা দেওয়াকে বলা হয় মাত্রা।
মাত্রার প্রকারভেদ:
মাত্রা অনুযায়ী বাংলা বর্ণ তিন ভাগে বিভক্ত। যথা :
ক. পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ
খ. অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ
গ. মাত্রাহীন বর্ণ
পূর্ণমাত্রাযুক্ত বর্ণ :
যে সব বর্ণের উপর পূর্ণমাত্রা অাছে তাকে পূর্ণ মাত্রাযুক্ত বর্ণ বলে।
➺ পূর্ণ মাত্রাযুক্ত বর্ণ ৩২ টি।
➺ পূর্ণমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ ৬ টি।
➺ পূর্ণমাত্রাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ ২৬ টি।
অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ :
যে সব বর্ণের উপর অর্ধমাত্রা অাছে তাকে অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ বলে।
➺ অর্ধমাত্রাযুক্ত বর্ণ – ৮ টি।
➺ অর্ধমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ – ১ টি।
➺ অর্ধমাত্রাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ – ৭ টি
মাত্রাহীন বর্ণ :
যে সব বর্ণের উপর কোন মাত্রা নেই তাকে মাত্রাহীন বর্ণ বলে।
➺ মাত্রাহীন বর্ণ – ১০ টি।
➺ মাত্রাহীণ স্বরবর্ণ – ৪ টি।
➺ মাত্রাহীণ ব্যঞ্জনবর্ণ – ৬ টি।
কার:
স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে কার বলে।
➺ বাংলা বর্ণমালায় কার -১০ টি।
➺ অ এর কোন সংক্ষিপ্ত রূপ নেই।
ফলা:
ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে ফলা বলে।
➺ বাংলা বর্ণমালায় সাধারণত ৭ টি ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ বা ফলা পরিলক্ষিত হয়।

ধ্বনি ও ধ্বনির প্রকারভেদ

ধ্বনি:
কোন ভাষার উচ্চারণের ক্ষুদ্রতম এককই হলো ধ্বনি। ভাষাকে বা ভাষার বাক প্রবাহকে বিশ্লেষণ করলে কতগুলো ক্ষুদ্রতম একক পওয়া যায় সেগুলোকে ধ্বনি বলে।
ধ্বনির প্রকারভেদ:
ধ্বনি দুই প্রকার। যথা:
ক. স্বরধ্বনি
খ. ব্যঞ্জনধ্বনি
স্বরধ্বনি:
যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস কাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোন প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি।
বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনি ১১ টি।
স্বরধ্বনির প্রকারভেদ:
স্বরধ্বনি দুই ভাগে বিভক্ত। যথা:
ক. মৌলিক স্বর
খ. যৌগিক স্বর
মৌলিক স্বর:
যে স্বরধ্বনি একক ভাবে উচ্চারিত হয় তাকে মৌলিক স্বর বলে।
বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বর ৯ টি। যথা: অ, অা, ই, ঈ উ, ঊ, ঋ, এ, ও।
যৌগিক স্বর:
পাশাপাশি দুটি স্বরধ্বনি থাকলে দ্রুত উচ্চারণের সময় তা একটি সংযুক্ত স্বরধ্বনি রূপে উচ্চারিত হয় এ রূপে এক সঙ্গে উচ্চারিত দুটো স্বরধ্বনিকে যৌগিক স্বর বা সান্ধ্যক্ষর বা দ্বিস্বর বলা হয়।
বাংলা ভাষায় যৌগিক স্বর ২৫ টি।
ব্যঞ্জন ধ্বনি:
যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি।
বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনধ্বনি ৩৯ টি।
ব্যঞ্জনধ্বনির প্রকারভেদ:
স্পর্শ ব্যঞ্জন বা স্পর্শধ্বনি:
ক থেকে ম পর্যন্ত প্রথম ২৫ টি ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারিত হওয়ার সময় ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাস মুখগহবরের কোন না কোন জায়গা স্পর্শ করে যায়। এজন্য এই ২৫টি ধ্বনিকে বলা হয় স্পর্শধ্বনি বা স্পৃষ্টধ্বনি।
ক-ম পর্যন্ত ২৫ টি ধ্বনিকে পাঁচটি বর্গ বা গুচ্ছে বিভক্ত করা হয়েছে যেখানে প্রতিটি বর্গে পাঁচটি করে ধ্বনি অাছে।
ক-বর্গীয় ধ্বনি: ক, খ, গ, ঘ, ঙ এ পাঁচটি ধ্বনিকে ক-বর্গীয় ধ্বনি বলে। ক-বর্গীয় ধ্বনি জিহবার গোড়ার দিকে নরম তালুর পশ্চাৎ ভাগ স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। ক-বর্গীয় ধ্বনিকে জিহবামুলীয় বা কণ্ঠ্য ধ্বনি বলে।
চ-বর্গীয় ধ্বনি: চ, ছ, জ, ঝ, ঞ এ পাঁচটি ধ্বনিকে চ-বর্গীয় ধ্বনি বলে। চ-বর্গীয় ধ্বনি জিহাবার অগ্রভাগ চ্যাপটা ভাবে তালুর সম্মুখ ভাগের সঙ্গে সংঘর্ষ করে উচ্চারিত হয়। এদের তালব্য স্পর্শধ্বনিও বলে।
ট-বর্গীয় ধ্বনি: ট, ঠ, ড, ঢ, ণ এ পাঁচটি ধ্বনিকে একত্রে ট-বর্গীয় ধ্বনি বলে। ট-বর্গীয় ধ্বনি জিহবার অগ্রভাগ কিঞ্চিৎ উল্টিয়ে ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশকে স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। ট-বর্গীয় ধ্বনিকে দন্তমূলীয় প্রতিবেষ্টিত ধ্বনি বা মূর্ধন্য ধ্বনিও বলা হয়।
ত-বর্গীয় ধ্বনি: ত, থ, দ, ধ, ন এ পাঁচটি ধ্বনিকে একত্রে ত-বর্গীয় ধ্বনি বলে। ত-বর্গীয় ধ্বনি জিহবা সম্মুখে প্রসারিত হয় এবং অগ্রভাগ ওপরের দাঁতের পাটির গোড়ার দিকে স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। ত-বর্গীয় ধ্বনিকে দন্ত্য ধ্বনিও বলা হয়।
প-বর্গীয় ধ্বনি: প, ফ, ব, ভ, ম এ পাঁচটি ধ্বনিকে একত্রে প-বর্গীয় ধ্বনি বলে। প-বর্গীয় ধ্বনি ওষ্ঠর সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে উচ্চারিত হয়। প-বর্গীয় ধ্বনিকে ওষ্ঠ্য ধ্বনিও বলা হয়।
● উচ্চারণের ভিত্তিতে স্পর্শধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ বিভক্ত।
ক. অঘোষধ্বনি
খ. ঘোষধ্বনি
অঘোষধ্বনি: আর যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না, তাদেরকে অঘোষ ধ্বনি বলে।
অঘোষধ্বনি ধ্বনিগুলো হলো: ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ।
ঘোষধ্বনি: যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয়, তাদেরকে ঘোষ ধ্বনি বলে।
ঘোষধ্বনিগুলো হলো : গ, ঘ, ঙ, জ, ঝ, ঞ, ড, ঢ, ণ, দ, ধ, ন, ব, ভ, ম।
● স্থায়ীকালের ভিত্তিতে স্পর্শধ্বনিকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. অল্পপ্রাণ ধ্বনি
খ. মহাপ্রাণ ধ্বনি
অল্পপ্রাণ ধ্বনি: কোন কোন ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয় না সে ধ্বনিগুলোকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে।
অল্পপ্রাণ ধ্বনিগুলো হলো : ক, গ, চ, জ, ট, ড, ত, দ, প, ব।
মহাপ্রাণ ধ্বনি : কোন কোন ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয়, সে ধ্বনিগুলোকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে।
মহাপ্রাণ ধ্বনিগুলো হলো :খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, থ, ধ, ফ, ভ।
নাসিক্য ধ্বনি: যেসব ধ্বনি উচ্চারণে নাক ও মুখ দিয়ে কিংবা কেবল নাক দিয়ে ফুসফুস তাড়িত বায়ু বের হয়ে উচ্চারিত হয় সে ধ্বনিগুলোকে নাসিক্য ধ্বনি বলে।
নাসিক্য ধ্বনিগুলো হলো : ঙ, ঞ, ণ, ন, ম।
উষ্মধ্বনি : যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় অামরা শ্বাস যতক্ষণ খুশি রাখতে পারি, সে ধ্বনিগুলোকে উষ্মধ্বনি বলে।
উষ্মধ্বনিগুলো হলো শ, ষ, স, হ।
অস্তঃস্থ ধ্বনি: যে সব ধ্বনির উচ্চারণ স্পর্শ ও উষ্মধ্বনির মাঝামাঝি তাদেরকে অস্তঃস্থ ধ্বনি বলে।
অন্তঃস্থ ধ্বনিগুলো হলো: য, র, ল, ব।
তালব্য ধ্বনি: যে ধ্বনি সাধারণত সম্মুখ তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় তাকে তালব্য ধ্বনি বলে।
তালব্য ধ্বনি হলো: য।
তাড়জাতধ্বনি : যে ধ্বনি জিহবার অগ্রভাগকে কম্পিত করে এবং তদ্বারা দন্তমূলকে একাধিক বার দ্রুত অাঘাত করে উচ্চারিত হয় তাকে তাড়নজাতধ্বনি বলে।
তাড়নজাত ধ্বনি হলো : র।
পার্শ্বিক ধ্বনি : যে ধ্বনি জিহবার অগ্রভাগকে মুখের মাঝামাঝি দন্তমূলে ঠেকিয়ে রেখে জিহবার এক বা দু পাশ দিয়ে মুখবিবর থেকে বায়ু বের হয়ে উচ্চারিত হয় তাকে পার্শ্বিক ধ্বনি বলে।
পার্শ্বিক ধ্বনি হলো : ল।
উষ্ম ঘোষধ্বনি: যে উষ্মধ্বনি উন্মুক্ত কণ্ঠের মধ্যে দিয়ে বাতাস জোরে নির্গত হয়ে উচ্চারিত হয় তাকে উষ্মঘোষ ধ্বনি বলে।
উষ্মঘোষ ধ্বনি হলো : হ।
তাড়নজাতধ্বনি: যে ধ্বনি জিহবার অগ্রভাগের তলদেশ দ্বারা ওপরের দন্তমূলে দ্রুত অাঘাত বা তাড়না করে উচ্চারিত হয় তাকে তাড়নজাত ধ্বনি বলে।
তাড়নজাতধ্বনি গুলো হলো : ড়, ঢ়।
পরাশ্রয়ী ধ্বনি: যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির আশ্রয়ে উপস্থাপিত হয় উচ্চারিত হয় তাকে পরাশ্রূী ধ্বনি বলে।
পরাশ্রয়ী ধ্বনিগুলো হলো: ং, ঃ এবং ঁ ।
অনুনাসিক ধ্বনি: যে ধ্বনি স্বরধ্বনির অনুনাসিকতার দ্যোতনা করে তাকে অনুনাসিক ধ্বনি বলে।
অনুনাসিক ধ্বনি হলো : ঁ।

ইংরেজি শব্দের বাংলা পারিভাষিক শব্দ

A
Academic : অধিবিদ্যা / শিক্ষায়তনিক
Allotment : বরাদ্দ
Admit card : প্রবেশ পত্র
Affidavit : শপথনামা / হলফনামা
Adult education : বয়স্ক শিক্ষা
Acting : ভারপ্রাপ্ত / অস্থায়ী
Academic year : শিক্ষাবর্ষ
Address of welcome : অভিনন্দন পত্র বা সংবর্ধনাভাষণ
Account : হিসাব
Autonomous : স্বায়ত্তশাসিত
Acknowledgement : প্রাপ্তিস্বীকার
Administrator : প্রশাসক
Article : অনুচ্ছেদ
Articles : নিয়মাবলি / ধারা
Agreement : চুক্তি / সম্মতি / মতৈক্য
Author : লেখক / গ্রন্থকার
Appendix : পরিশিষ্ট
Agenda : আলোচ্য-সূচি
Ad-hoc : অনানুষ্ঠানিক / তদর্থক
Air-conditioned : শীতাতপনিয়ন্ত্রি

Adviser : উপদেষ্টা
Aid : সাহায্য
Air-mail : বিমান-ডাক
Admission : ভর্তি, প্রবেশ
Assembly : পরিষদ, সভা
Acting editor : ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
Abbreviation : সংক্ষেপণ
Auditor : হিসাবনিরীক্ষক
Assembly house : সংসদ ভবন
Accessories : সরঞ্জাম
B
Boyscout : ব্রতী বালক
Bearer : বাহক
Biography : জীবনচরিত, জীবনী
Bio-data : জীবনবৃত্তান্ত
Basic : মৌলিক, মৌল
Basic pay : মূল বেতন
Background : পটভূমি
Bureau : সংস্থা
Banker : ব্যাংক মালিক
Bail : জামিন
Book-post : খোলা ডাক
Ballot-paper : ভোটপত্র
Bidder : নিলাম ডাকিয়ে
Break of study : অধ্যয়ন-বিরতি, শিক্ষা বিরতি
Brand : ছাপ, মার্কা
Bidding : নিলাম ডাক
C
Capital : পুঁজি, মূলধন
Cabinet : মন্ত্রিপরিষদ
Caption : শিরোনাম, পরিচিতি
Campus : অঙ্গন / ক্যাম্পাস
Crown : মুকুট
Carbon di-oxide : অঙ্গারাম্লজান
Constitution : সংবিধান
Catalogue : তালিকা, গ্রন্থতালিকা
Conduct : আচরণ
Calendar : পঞ্জিকা
Copy : প্রতিলিপি
Cable : তার
Chancellor : আচার্য
Cartoon : ব্যঙ্গচিত্র
Code : বিধি, সংকেত
Copyright : লেখস্বত্ব
Calendar : ইস্ত্রি
Care-taker : তত্ত্বাবধায়ক
Cold storage : হিমাগার
Civil war : গৃহযুদ্ধ
Cordon : বেষ্টনী
Conference : সম্মেলন
D
Diplomat : কূটনীতিক
Deputation : প্রেষণ
Diagnosis : নিদান / রোগনির্ণয়
Defence : প্রতিরক্ষা
Donation : দান, অনুদান
Demonstrator : প্রদর্শক
Donor : দাতা
Dynamic : গতিশীল, গভীর
Deed of gift : দানপত্র
Dialect : উপভাষা
Data : উপাত্ত
Deed : দলিল
Diplomacy : কূটনীতি
Dowry : যৌতুক
Deputy : উপ-প্রতিনিধি
Deputy Secretary : উপ-সচিব
E
Editor : সম্পাদক
Editorial : সম্পাদকীয়
Edition : সংস্করণ
Enquiry : অনুসন্ধান, তদন্ত
Exchange : বিনিময়
Equation : সমীকরণ
Embargo : অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা
Expert : বিশেষজ্ঞ
Excuse : অজুহাত
Ex-officio : পদাধিকার বলে
F
File : নথি
Faculty : অনুষদ
Forecast : পূর্বাভাস
Fiction : কথাসাহিত্য
Fundamental : মৌলিক / মৌল / মূল
Follow-up : অনুসরণ করা
G
Gazetted : ঘোষিত
Global : বৈশ্বিক
Galaxy : ছায়াপথ
Geology : ভূতত্ত্ব
Green house : সবুজ বলয় / গ্রিন হাউস
Goodwill : সুনাম
Godown : গুদাম
Green-room : সাজঘর
Gunny : চট
Gazette : ঘোষণাপত্র
H
Hostile : বৈরী, প্রতিকূল
Hand bill : প্রচারপত্র
Hostage : জিম্মি
Headline : শিরোনাম
Home Ministry : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
Hood : বোরখা, বোরকা
Hypocrisy : কপটতা, ভণ্ডামি
Hand-book : তথ্যপুস্তিকা
I
Interview : সাক্ষাৎকার
Internal : অভ্যন্তরীণ
Index : নির্ঘণ্ট, নির্দেশক
Interim : অন্তর্বর্তীকালীন
Irrigation : সেচ
Immigrant : অভিবাসী
Idiom : বাগধারা
Interpreter : দোভাষী
J
Justice : বিচারপতি
Judge : বিচারক
K
Key-word : মূল-শব্দ
Key note : মূল ভাব, মূল সুর
L
Leap-year : অধিবর্ষ
Literature : সাহিত্য
Lien : পূর্বস্বত্ব / লিয়েন
Legend : কিংবদন্তি
Limited : সীমিত, সীমাবদ্ধ
Lock-up : হাজত
M
Manuscript : পাণ্ডুলিপি
Mayor : মেয়র, পুরকর্তা
Manifesto : ইশতেহার
Millennium : সহস্রাব্দ
Method : প্রণালি
Memorandum : স্মারকলিপি
Mercury : পারদ
Medical College : চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়
N
Nationality : জাতীয়তা
National Assembly : জাতীয় পরিষদ
Note : মন্তব্য
Nationalisation : জাতীয়করণ / রাষ্ট্রীয়করণ
Notice Board : বিজ্ঞপ্তি ফলক
Nursery : শিশুমালা / তরুশালা
O
Obedient : অনুগত, বাধ্য
Option : ইচ্ছা
Office-bearer : কর্মচারী
Occupation : বৃত্তি / পেশা / দখল
Optional : ঐচ্ছিক
Out-post : ফাঁড়ি
P
Passport : ছাড়পত্র / পাসপোর্ট
Public : সরকারি লোক / জনসাধারণ
Public works : গণপূর্ত
Principle : তত্ত্ব / সূত্র / নীতি
Para : অনুচ্ছেদ
Pay-bill : বেতন-বিল / বেতন-পত্র
Parliament : সংসদ
Publication : প্রকাশনা
Pollution : দূষণ
Principal : অধ্যক্ষ / প্রধান
Payee : প্রাপক
Philanthropist : লোকহিতৈষী
Q
Quarantine : সঙ্গরোধ
R
Rank : পদমর্যাদা
Republic : প্রজাতন্ত্র
Routine : রুটিন / নিত্যক্রম
Relation : সম্পর্ক
Registration : নিবন্ধন
Regiment : সৈন্যদল
Ratio : অনুপাত
S
Sanction : অনুমোদন / মঞ্জুরি
Salary : বেতন
Sir : মহোদয় / জনাব / স্যার
Scale : মাপনী / স্কেল / ক্রম
Specialist : বিশেষজ্ঞ
Secondary : মাধ্যমিক
Sabotage : অন্তর্ঘাত
Secretary : সচিব
T
Termination : অবসান
Telecommunication : টেলিযোগাযোগ
Theory : তত্ত্ব / সিদ্ধান্ত / সূত্র
U
Union : সংঘ / ইউনিয়ন; সংযোগ
Up-to-date : হালনাগাদ
Urbanization : নগরায়ন
V
Valid : বৈধ / সিদ্ধ / চালু
Venue : স্থান
Viva-voce : মৌখিক পরীক্ষা
Vocation : বৃত্তি
Vehicle : যান / গাড়ি
Vacation : অবকাশ / ছুটি
W
Worship : পূজা
Walk-out : সভাবর্জন / ওয়াক আউট
White paper : শ্বেতপত্র
X
X-ray : রঞ্জনরশ্মি
Y
Year-Book : বর্ষপঞ্জি
Z
Zoo : চিড়িয়াখানা
Zone : অঞ্চল; বলয় / মণ্ডল

সমার্থক শব্দ

★ অগ্নি — অনল, পাবক, আগুন, দহন, সর্বভূক, শিখা, হুতাশন, বহ্নি, বৈশ্বানর, কৃশানু, বিভাবসু, সর্বশুচি।
★ অন্ধকার — আঁধার, তমঃ, তমিস্রা, তিমির, আন্ধার, তমস্র, তম।
★ অতনু — মদন, অনঙ্গ, কাম, কন্দর্প
★ আকাশ — আসমান, অম্বর, গগন, নভোঃ, নভোমণ্ডল, খগ, ব্যোম, অন্তরীক্ষ।
★ আলোক — আলো, জ্যোতি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা।
★ ইচ্ছা — আকাঙ্ক্ষা, অভিলাষ, অভিরুচি, অভিপ্রায়, আগ্রহ, স্পৃহা, কামনা, বাসনা, বাঞ্চা, ঈপ্সা, ঈহা।
★ কপাল — ললাট, ভাল, ভাগ্য, অদৃষ্ট, নিয়তি, অলিক।
★ কোকিল — পরভৃত, পিক, বসন্তদূত।
★ কন্যা — মেয়ে, দুহিতা, দুলালী, আত্মজা, নন্দিনী, পুত্রী, সূতা, তনয়া।
★ গরু — গো, গাভী, ধেনু
★ ঘোড়া — অশ্ব, ঘোটক, তুরগ, বাজি, হয়, তুরঙ্গ, তুরঙ্গম।
★ ঘর — গৃহ, আলয়, নিবাস, আবাস, আশ্রয়, নিলয়, নিকেতন, ভবন, সদন, বাড়ি, বাটী, বাসস্থান।
★ চক্ষু –চোখ, আঁখি, অক্ষি, লোচন, নেত্র, নয়ন, দর্শনেন্দ্রিয়।
★ চন্দ্র — চাঁদ, চন্দ্রমা, শশী, শশধর, শশাঙ্ক, শুধাংশু, হিমাংশু, সুধাকর, সুধাংশু, হিমাংশু, সোম, বিধু, ইন্দু, নিশাকর, নিশাকান্ত, মৃগাঙ্ক, রজনীকান্ত।
★ চুল — চিকুর, কুন্তল, কেশ, অলক।
★ জননী মা, মাতা, প্রসূতি, গর্ভধারিণী, জন্মদাত্রী।
★ দিন — দিবা, দিবস, দিনমান।
★ দেবতা — অমর, দেব, সুর, ত্রিদশ, অমর, অজর, ঠাকুর।
★ দ্বন্দ্ব — বিরোধ, ঝগড়া, কলহ, বিবাদ, যুদ্ধ।
★ তীর — কূল, তট, পাড়, সৈকত, পুলিন, ধার, কিনারা।
★ নারী — রমণী, কামিনী, মহিলা, স্ত্রী, অবলা, স্ত্রীলোক, অঙ্গনা, ভাসিনী, ললনা, কান্তা, পত্নী, সীমন্তনী।
★ নদী — তটিনী, তরঙ্গিনী, প্রবাহিনী, শৈবালিনী, স্রোতস্বতী, স্রোতস্বিনী, গাঙ, স্বরিৎ, নির্ঝরিনী, কল্লোলিনী।
★ নৌকা — নাও, তরণী, জলযান, তরী
★ পণ্ডিত — বিদ্বান, জ্ঞানী, বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ।
★ পদ্ম — কমল, উৎপল, সরোজ, পঙ্কজ, নলিন, শতদল, রাজীব, কোকনদ, কুবলয়, পুণ্ডরীক, অরবিন্দ, ইন্দীবর, পুষ্কর, তামরস, মৃণাল, সরসিজ, কুমুদ।
★ পৃথিবী — ধরা, ধরিত্রী, ধরণী, অবনী, মেদিনী, পৃ, পৃথ্বী, ভূ, বসুধা, বসুন্ধরা, জাহান, জগৎ, দুনিয়া, ভূবন, বিশ্ব, ভূ-মণ্ডল।
★ পর্বত — শৈল, গিরি, পাহাড়, অচল, অটল, অদ্রি, চূড়া, ভূধর, নগ, শৃঙ্গী, শৃঙ্গধর, মহীধর, মহীন্দ্র।
পানি জল, বারি, সলিল, উদক, অম্বু, নীর, পয়ঃ, তোয়, অপ, জীবন, পানীয়।
★ পুত্র — তনয়, সুত, আত্মজ, ছেলে, নন্দন।
★ পত্নী — জায়া, ভার্যা, ভামিনী, স্ত্রী, অর্ধাঙ্গী, সহধর্মিণী, জীবন সাথী, বউ, দারা, বনিতা, কলত্র, গৃহিণী, গিন্নী।
★ পাখি — পক্ষী, খেচর, বিহগ, বিহঙ্গ, বিহঙ্গম, পতত্রী, খগ, অণ্ডজ, শকুন্ত, দ্বিজ
★ ফুল — পুষ্প, কুসুম, প্রসূন, রঙ্গন
★ বৃক্ষ — গাছ, শাখী, বিটপী, অটবি, দ্রুম, মহীরূহ, তরু, পাদপ।
★ বন — অরণ্য, জঙ্গল, কানন, বিপিণ, কুঞ্জ, কান্তার, অটবি, বনানী, গহন।
★ বায়ু — বাতাস, অনিল, পবন, হাওয়া, সমীর, সমীরণ, মারুত, গন্ধবহ।
★ বিদ্যুত বিজলী, ত্বড়িৎ, ক্ষণপ্রভা, সৌদামিনী, চপলা, চঞ্চলা, দামিনী, অচিরপ্রভা, শম্পা।
★ মানুষ — মানব, মনুষ্য, লোক, জন, নৃ, নর।
মাটি ক্ষিতি, মৃত্তিকা,
★ মেঘ — জলধর, জীমৃত, বারিদ, নীরদ, পয়োদ, ঘন, অম্বুদ, তায়দ, পয়োধর, বলাহক, তোয়ধর।
★ রাজা — নরপতি, নৃপতি, ভূপতি, বাদশাহ।
★ রাত — রাত্রি, রজনী, নিশি, যামিনী,
শর্বরী, বিভাবরী, নিশা, নিশিথিনী, ক্ষণদা, ত্রিযামা।
★ শরীর — দেহ, বিগ্রহ, কায়, কলেবর, গা, গাত্র, তনু, অঙ্গ, অবয়ব।
★ সর্প — সাপ, অহি, আশীবিষ, উরহ, নাগ, নাগিনী, ভুজঙ্গ, ভুজগ, ভুজঙ্গম, সরীসৃপ, ফণী, ফণাধর, বিষধর, বায়ুভুক।
★ স্ত্রী — পত্নী, জায়া, সহধর্মিণী, ভার্যা, বেগম, বিবি, বধূ।
★ স্বর্ণ — সোনা, কনক, কাঞ্চন, সুবর্ণ, হেম, হিরণ্য, হিরণ।
★ স্বর্গ — দেবলোক, দ্যুলোক, বেহেশত, সুরলোক, দ্যু, ত্রিদশালয়, ইন্দ্রালয়, দিব্যলোক, জান্নাত
★ সাহসী — অভীক, নির্ভীক।
★ সাগর — সমুদ্র, সিন্ধু, অর্ণব, জলধি, জলনিধি, বারিধি, পারাবার, রত্নাকর, বরুণ, দরিয়া, পারাবার, বারীন্দ্র, পাথার, বারীশ, পয়োনিধি, তোয়ধি, বারিনিধি, অম্বুধি।
★ সূর্য — রবি, সবিতা, দিবাকর, দিনমনি, দিননাথ, দিবাবসু, অর্ক, ভানু, তপন, আদিত্য, ভাস্কর, মার্তণ্ড, অংশু, প্রভাকর, কিরণমালী, অরুণ, মিহির, পুষা, সূর, মিত্র, দিনপতি, বালকি, অর্ষমা।
★ হাত — কর, বাহু, ভুজ, হস্ত, পাণি
★ হস্তী — হাতি, করী, দন্তী, মাতঙ্গ, গজ, ঐরাবত, দ্বিপ, দ্বিরদ, বারণ, কুঞ্জর, নাগ
★ লাল — লোহিত, রক্তবর্ণ।
★ ঢেউ — তরঙ্গ, ঊর্মি, লহরী, বীচি, মওজ।